নিজস্ব প্রতিবেদন: শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা— সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নানা পদে ডিমের উপর ভরসা রাখেন বেশির ভাগ মানুষ। ডিম প্রায় প্রতি দিনই সব বাড়িতে কম-বেশি আনা হয়। আট থেকে আশি— প্রায় সকলেরই ডিম পছন্দের তালিকায়। তবে সাদা ডিম না কি লালচে খোলার ডিম— কোনটা ভাল, কোনটা খাওয়া বেশি উপকারী, এ নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছেই।
ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)-র গবেষকদের মতে, একটি মোটামুটি ৫০ গ্রাম ওজনের ডিমে ৭২ ক্যালোরি ও ৪.৭৫ গ্রাম ফ্যাট ( যার মধ্যে দ্রবণীয় মাত্র ১.৫ গ্রাম)। সাদা ও লাল ডিমে এই পুষ্টিগুণের পরিমাণ প্রায় এক। সুতরাং, লাল হোক বা সাদা, দু’ধরনের ডিমের খাদ্যগুণ বা পুষ্টিগুণ যে প্রায় সমান— সে কথা মেনে নিচ্ছেন বিশ্বের বেশির ভাগ পুষ্টিবিদই।
কিন্তু এ তো জানা গেল ডিমের খোলার রং অনুযায়ী তার খাদ্যগুণ বা পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। এটা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, ডিমের কুসুমের রংও দু’রকমের হয়, হলুদ আর কমলা। কিন্তু কোন রঙের কুসুমের ডিম বেশি স্বাস্থ্যকর তা জানেন?
বেশিরভাগ মানুষেরই ধারণা, কুসুমের রং যত গাড়, ওই ডিম তত স্বাস্থ্যকর। কিন্তু জানেন কী, এই ধারণা কতটা সঠিক?
ইউএসডিএ-র গবেষকদের মতে, কুসুমের রং নির্ভর করে মূলত মুরগির খাবারের ওপর। আর ডিমের কুসুমের রং কমলা হয় ক্যারোটিনয়েড নামের এক রকম রাসায়নিকের প্রভাবে। মুরগি খোলা জায়গায় যত বেশি ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাবে, তার ডিম ততই গাড় রঙের হবে। বেশ কিছু খামারে ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ খাবার দেওয়া হয় মুরগিকে। যার প্রভাবে ওই সব মুরগির ডিমের কুসুমের রং কমলা হয়। মার্কিন গবেষকদের মতে, দু’টি কারণে কুসুমের রং গাড় হতে পারে। এক, মুরগিটি খোলা জায়গায় যত বেশি ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক খাবার থেকে পুষ্টি আহরণ করছে অথবা তাকে বিশেষ ধরনের খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।
মার্কিন গবেষকদরা জানাচ্ছেন, খামারের যে কোনও মুরগির চেয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে পুষ্টিকর খাবার খুঁজে খাওয়া মুরগির ডিমে ভিটামিন ই, ভিটামিন এ আর ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। আর রংও গাড় হয়। তাই কুসুমের রং যাতে গাড় হলুদ বা কমলা হয়, তার জন্য অনেক খামারের মালিক মুরগিকে ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ খাবার যেমন লাল ক্যাপসিকাম খাওয়ান। কিন্তু তাতে কুসুমের খাদ্যগুণ বা পুষ্টিগুণে খুব একটা ফারাক হয় না।