কমল কুমার সেন:::স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে মৃতদেহ জলের ট্যাঙ্কের মধ্যে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বধূকে খুন করার পরে বাড়িরই জলাধারে ফেলে দেওয়া হয়েছিল মৃতদেহ। বুধবার সেই জলাধার থেকে উদ্ধার হয়েছে মৃতার রক্তাক্ত দেহটি। বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে জগদ্দল থানার শ্যামনগর শান্তিগড় স্ট্রিট এলাকায়। মৃতার নাম প্রিয়াঙ্কা পুরকাইত ওরফে পিউ ( ৩৩), তাঁর স্বামীর নাম আবির পুরকাইত।। শান্তিগড় স্ট্রিটের বাসিন্দা ইছাপুর মেটাল ফ্যাক্টরির কর্মচারী আবীর পুরকাইতের সঙ্গে ২০১৬ সালে বিবাহ হয়েছিল বাঁকুড়ার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কার। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁর উপরে নির্যাতন চালাত আবির। এ দিন পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতেই প্রতিবেশী ও পরিজনেরা আবিরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ জানান। বাড়ি থেকেই ওই যুবককে প্রথমে আটক করে জগদ্দল থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিতে মৃতদেহ আটকে পুলিশের সামনে কিছু ক্ষণ বিক্ষোভও দেখান মৃতার পরিজনেরা। জলাধার থেকে বধূর দেহ উদ্ধারের এই ঘটনায় এলাকায় প্রবল উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার মুখে ও নাকে আঘাত এবং রক্তপাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান। ব্যারাকপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শ্রীহরি পাণ্ডে বলেন, ”ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”স্থানীয় বাসিন্দারা ওই বাড়ির সামনে এসে ভিড় জমান। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। খবর পেয়ে জগদ্দল থানার পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। স্থানীয়দের অনেকেই অভিযুক্তকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। মৃতার পরিজনদের দাবি, প্রিয়াঙ্কা পাঁচ মাসের আন্তঃস্বত্তা ছিল। মৃতার মাসি মায়া রানী মন্ডলের অভিযোগ, এদিন বেলায় বাড়িতে লাঞ্চ করতে এসে প্রিয়াঙ্কাকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে রিজারভারে ঢুকিয়ে দেয়। এরপর স্বামী নিখোঁজের নাটক জুড়ে দেয়। প্রিয়াঙ্কার মাসি মায়ারানি মণ্ডল বলেন, ”আমরা ওদের ঘরে গিয়ে দেখলাম, প্রিয়াঙ্কা নেই। ওর স্বামী দাঁড়িয়ে আছে। ঘরের ভিতরে রক্তের দাগ। ওই বাড়িতে সিঁড়ির তলায় জলের একটি রিজ়ার্ভার রয়েছে। সেটা কী, জানতে চাওয়ায় আবির নিজেই বলল, ওটা রিজ়ার্ভার। ভিতরে ওর স্ত্রী পড়ে আছে। নিজেই দেহ বার করে আনল।” মায়ারানি আরও বলেন, ”পাঁচ বছর আগে ওদের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই খুব অত্যাচার করত আবির। নিয়মিত মারধর করত প্রিয়াঙ্কাকে। মেয়েটা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বাও ছিল।