যে মেয়েটা এক শরত্ শিশির মেখে,
একগুচ্ছ কাশফুল নিয়ে দৌড়ে যায় রেল বস্তির অন্ধকার ঝুপড়ি ঘরটার দিকে..
সে কী জানে বোধনের মানে?
যে মেয়েটা একমুঠো ভাতের জন্য কঙ্কালসার হাতটা বাড়িয়ে দেয় পথযাত্রীর দিকে..
সে কী জানে বোধনের মানে?
যে কন্যা ভ্রূণটা তীক্ষ্ণ শলাকার আঘাতে রক্তাক্ত হয় সে কী জানে বোধনের মানে?
যে মেয়েটা নির্দ্বিধায় সহ্য করে প্রসূতি যন্ত্রণা,
রাতের পর রাত কাটায় স্যাঁতসেঁতে আতুড়ঘরে
তার জন্য কী উচ্চারিত হয় বোধনের মন্ত্র?
যে মেয়েটা পেটের দায়ে শরীর বেচে,
ধর্ষকাসুরদের কবলে পড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে ওঠে যার শরীর,
তার জন্য কী রামচন্দ্র করেছিলেন অকাল বোধন?
ইচ্ছা গুলোকে প্রতিনিয়ত মেরে ফেলে যে মেয়েটা সংসার নামক বিশাল অগ্নিকুণ্ডে নিজেকে আত্মাহুতি দেয়.
তারজন্য কে উচ্চারণ করে বোধনের মন্ত্র?
আজ বোধন হয় মাটির মৃন্ময়ী মায়ের,
বোধন হয় জ্যান্ত দুর্গার নয়, মিথ্যা খেলার পুতুলের।
যেদিন ঘরে ঘরে জননী-জায়া-কন্যার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে,
সেদিনই উচ্চারিত হবে বোধনের প্রকৃত মন্ত্র।
উদাত্ত কন্ঠে উচ্চারিত হবে ‘মা তুঝে সালাম’।
নারীকন্ঠগুলো সেদিন সমস্বরে বলে উঠবে.
‘ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’।